মাটিতে বিনিয়োগ বিশ্বের প্রায় সব দেশেই লাভজনক হিসেবে পরিগণিত হয়। বর্তমানের প্রেক্ষাপটে রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করা সঠিক হবে কি না, নিরাপদ হবে কি না—এটা নিয়ে অনেকেই খুব দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের জনসংখ্যা হবে প্রায় ৩২ কোটি। জমির পরিমাণ তো আর বাড়ছে না, কিন্তু চাহিদা প্রতিদিনই বাড়ছে।
মূল বিষয় যাওয়ার আগে চলুন ছোট্ট একটি গল্প শুনি। আমার পরিচিত দুজন ভদ্রলোক। সম্পর্কে তারা ভায়রাভাই। দুজনই সরকারি চাকরি করতেন এবং রাজশাহী শহরে থাকতেন। ঘটনাটা প্রায় ৫০ বছর আগের। দুজন তাদের প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে ২২ হাজার টাকা করে ঋণ নেন। তাদের মধ্যে এক ভায়রাভাই সেই টাকা দিয়ে একটা ফ্রিজ এবং একটা খাট কেনেন। অন্যজন রাজশাহী শহরের পাশে সেই ২২ হাজার টাকা দিয়ে জমি কিনেছিলেন। বুঝতেই পারছেন, যিনি খাট ও ফ্রিজ কিনেছিলেন তার কী অবস্থা। আর যিনি জমি কিনেছিলেন সেই জমির বর্তমান দাম প্রায় ১০ কোটি টাকা।
মাটিতে বিনিয়োগ বিশ্বের প্রায় সব দেশেই লাভজনক হিসেবে পরিগণিত হয়। বর্তমানের প্রেক্ষাপটে রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করা সঠিক হবে কি না, নিরাপদ হবে কি না—এটা নিয়ে অনেকেই খুব দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন। আমাকে অসংখ্য মানুষ ফোন করেছেন, ইমেইল করেছেন, জিজ্ঞাসা করেছেন বর্তমান পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং দেশীয় অর্থনীতি যে অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সে অবস্থায় রিয়েল এস্টেট সেক্টরে বিনিয়োগ করা ঠিক হবে কি না। যে হারে জনসংখ্যা বাড়ছে, তাতে ধারণা করা হচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের জনসংখ্যা হবে প্রায় ৩২ কোটি। জমির পরিমাণ তো আর বাড়ছে না, কিন্তু চাহিদা প্রতিদিনই বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে ধারণা করা যায় যে সামনে বসবাসযোগ্য জমির পরিমাণ অনেক বেশি লাগবে। তা-ই যদি হয়, তাহলে চাহিদা অনেক বেড়ে গেলে সরবরাহ যেহেতু সীমাবদ্ধ, ফলে দাম বাড়বে। আর প্রতি বছর প্রতিদিন মুদ্রাস্ফীতিজনিত প্রভাবের কারণে টাকা তার মূল্যমান হারায়, ফলে দাম বাড়তে থাকে। শুধু যদি মুদ্রাস্ফীতির সমন্বয়ও হয়, তারপরও দেখা যাবে ১০ বছর পরে জমির দাম এমনিতেই দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আপনি বর্তমান পরিস্থিতিতে জমিতে বিনিয়োগ করবেন কি না। বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্যের তীব্র ঊর্ধ্বগতি, ডলারের তীব্র সংকট এবং তার ফলে টাকার মান কমে যাচ্ছে, আমাদের দেশীয় আয় কমে যাচ্ছে, মানুষ দ্রুত গরিব হচ্ছে। তাছাড়া বর্তমানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দেশীয় অর্থনীতি আস্তে আস্তে সংকটময় অবস্থার দিকে ধাবিত হচ্ছে। এটা যদি শুধু বাংলাদেশের কথা বলি, ভুল হবে—বিশ্বের উন্নত দেশগুলোরও একই অবস্থা। কিন্তু রাষ্ট্রের একজন সদস্য হিসেবে আপনি আপনার বিনিয়োগ পোর্টফোলিও কীভাবে সাজাবেন এটা আপনার বিচক্ষণতা, দূরদর্শিতা এবং জ্ঞানের ওপর নির্ভর করে। আরেকটা জিনিসের উপর এটা নির্ভর করে—সেটা হচ্ছে, আপনার বিনিয়োগ সক্ষমতা। এখন আপনি জমিতে বিনিয়োগ করবেন কি না, তার আগে আপনাকে বুঝতে হবে আপনি আপনার পোর্টফোলিওটাকে কীভাবে সাজাবেন। পোর্টফোলিও হচ্ছে মূলত একটা বান্ডেল অব ইনভেস্টমেন্ট। মানে অনেকগুলো জায়গায় আপনি যে বিনিয়োগ করছেন, সবগুলোকে একত্র করলে হবে বিনিয়োগ পোর্টফোলিও।
জমিতে বিনিয়োগ করুন বা অন্য যে ক্ষেত্রেই বিনিয়োগ করুন, বিনিয়োগ করার আগে আপনাকে খেয়াল করতে হবে যে আপনি ৬ মাস থেকে ১ বছরের (বেশি হলে ২ বছরের) ইমার্জেন্সি ফান্ড আপনি একপাশে সরিয়ে রেখেছেন কি না, যেটা আপনি খুব সহজেই নগদায়ন করতে পারেন বা নগদে পরিণত করতে পারেন। এবার চিন্তা করতে হবে যে আপনার ইনভেস্টেবল ফান্ড বা বিনিয়োগযোগ্য টাকা কত আছে।
বিনিয়োগযোগ্য যে ফান্ড আপনার থাকবে সেটার পুরোটাই আপনি জমিতে বিনিয়োগ করবেন না। এটাকে দুই ভাগে ভাগ করে ফেলুন বা তিন ভাগে, তিন ভাগের দুই ভাগ আপনি জমির জন্য রাখুন আর এক ভাগ এমনভাবে বিনিয়োগ করুন যেন এটা খুব সহজেই লিকুইড করতে পারেন। সেগুলো হচ্ছে, সরকারের সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন। স্টক মার্কেটে ভালো শেয়ার দেখে অথবা মিউচুয়াল ফান্ড দেখে বিনিয়োগ করতে পারেন, ব্যাংকে ভালো রেট দেখে বিনিয়োগ করতে পারেন অথবা স্বর্ণে বিনিয়োগ করতে পারেন। কোনো কোনো দেশে কারেন্সিতে বিনিয়োগ করা যায়, কিন্তু এদেশে কারেন্সিতে বিনিয়োগ করা নিষিদ্ধ। আরেকটি কাজ করতে পারেন—ভালো কোনো কোম্পানির ইকুইটিতে বিনিয়োগ করতে পারেন। তা-ও খুব সহজ কাজ না। ভালো কোম্পানি খুঁজে বের করে তারপর সেখানে বিনিয়োগ করবেন—বিপদে পড়েন কি না সেটা একটা বিষয়। অনেকেই সমবায় সমিতিতে বিনিয়োগ করেন—কিন্তু এটাও দেখার বিষয়, কারণ এখানে ঝুঁকি জড়িত থাকে। হয়তোবা এমন কোথাও বিনিয়োগ করে বসলেন, দেখলেন কিছুদিন পর সমিতি উধাও।
বিনিয়োগযোগ্য যে টাকা আপনি জমিতে অথবা রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করবেন বলে ঠিক করেছেন সেই টাকা বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে এখন অনেক সতর্ক হয়ে বিনিয়োগ করতে হবে। কারণ রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ বাংলাদেশের জন্যে বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। বিভিন্ন নামহীন, বেনামী বা কখনো কখনো নামকরা প্রতিষ্ঠানেও বিনিয়োগ করে বিড়ম্বনার শিকার হতে পারেন। ঢাকা শহরের আশপাশে বা অন্য শহরেও রিয়েল এস্টেটে প্লট কেনা একটা অতি বিড়ম্বনার বিষয়। কিস্তিতে কিনতে গেলেও সচেতন হতে হবে, কারণ আপনি কোথায় বিনিয়োগ করেছেন, কাদের সাথে বিনিয়োগ করছেন কাদের কাছ থেকে কিনছেন সেটা ভাল করে বুঝতে হবে। তাদের অতীত অভিজ্ঞতা আছে কি না, আগের বরাদ্দকৃত প্লট তারা সঠিকভাবে হস্তান্তর করেছে কি না, এমন অনেকগুলো বিষয় বোঝার আছে। কোনো ফ্ল্যাটে বিনিয়োগ করলেও একই রকম সতর্কতা জরুরি।
কিস্তি ছাড়াও এককালীন মূল্য পরিশোধ করে জমি কিনতে পারেন যা অনেকের পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু সম্ভব—কীভাবে? আপনি হয়তো ঢাকাতে জমি কিনতে পারছেন না—সেক্ষেত্রে ঢাকার বাইরে নিজের এলাকায় অল্প দামে জমি কিনতে পারেন। কারণ আমরা কিন্তু কথা বলছি বিনিয়োগ নিয়ে। আপনার আসলে ফিনান্সিয়াল শিক্ষাটা থাকতে হবে। কারণ কেউ বলছে আজ যদি জমি কিনেন তাহলে পাঁচ বছর পরে আপনার জমির দাম দ্বিগুণ হবে। দ্বিগুণ হতে পারে কোনো কোনো জায়গায়। দ্বিগুণ কেন, তিনগুণও হতে পারে। কিন্তু এখানে যেটা বোঝার দরকার সেটা হচ্ছে, দ্বিগুণ হওয়া মানে প্রকৃতপক্ষে দ্বিগুণ হওয়া নয়। এর মধ্যে থেকে বাদ দিতে হবে ৫ বছরে মুদ্রাস্ফীতির প্রভাবে টাকার যে দাম কমেছে, সেটা। তার মানে, ধরি, ১০ শতাংশ যদি মূল্যস্ফীতি হয়, এখনকার ১ লাখ টাকা থেকে এক বছর পরে থাকে ৯০ হাজার টাকা। তাহলে এভাবে হিসাব করলে দেখবেন পাঁচ বছর পর আপনার ১ লাখ টাকার অবস্থান কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। তার মানে ইনফ্লেশনারি ইফেক্টের কারণে আপনার ৫০ শতাংশ নাই। অর্থাৎ এখন ১ লাখ টাকার প্রকৃত দাম ৫ বছর পরে গিয়ে হচ্ছে ৫০ হাজার টাকা। তাই এখনকার ১ লাখ টাকা যদি ৫ বছর পরে গিয়ে ২ লাখ টাকা হয় তাহলে বুঝতে হবে, ১ লাখ টাকা ১ লাখ টাকাই আছে।
আপনার টাকার দাম কমেওনি, বাড়েওনি। এই শিক্ষাগুলো থাকতে হবে, তাহলে সঠিক চিত্র বুঝতে পারবেন এবং বিনিয়োগ করার সময় সেই বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগাতে পারবেন।
তারপরেও জমিতে বিনিয়োগ করা অলাভজনক নয়। কারণ ব্যাংক আপনাকে যে সুদ বা মুনাফা সেটা আপনার ইনফ্লেশনকে কাভার করছে না। সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারেন। সেখানে ইনফ্লেশনকে কাভার করছে বটে, কিন্তু সঞ্চয়পত্রে বেশি টাকা বিনিয়োগ করতে পারবেন না। এখানে একটা সীমাবদ্ধতা আছে। জমিতে বিনিয়োগ করতে পারবেন, কিন্তু এখন কথা হচ্ছে জমিতে যে বিনিয়োগ করবেন, সেই বিনিয়োগ কোথায় করবেন? বাংলাদেশের একটা বিষয় হচ্ছে দখলটা ঠিক রাখা, জমিটা বুঝে পাওয়া, এই জিনিসগুলোকে মাথায় নিতে হয়। এজন্য প্রথম কথা হচ্ছে, যদি বিনিয়োগ করতে চান, তাহলে দেখবেন যেখানে আপনার গ্রামের বাড়ি সেখানে সামনে কোনো ভালো রাস্তা বা কোনো কালভার্ট হবে কি না। মানে ভবিষ্যতে খুব তাড়াতাড়ি জমির দাম বাড়বে কি না। এরকম কোনো জায়গা থাকলে সেখানে বিনিয়োগ করুন।
যখন পদ্মা সেতু হয়নি, তখন অনেক মানুষ জানত যে পদ্মা সেতু হচ্ছে, তাই আশেপাশে জমি কিনে রেখেছে। তাদের জমির দাম কিন্তু হঠাৎ করে অনেক বেড়ে গেছে এবং পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এখন ওখানকার জমির দাম আরও দ্রুত বাড়ছে। কারণ এখন ঢাকায় ফরিদপুর, খুলনাসহ ওই পুরো অঞ্চলের যোগাযোগ খুব সুন্দর হয়ে গেছে। ফলে এই রাস্তার পাশ দিয়ে জমির দাম হু হু করে বাড়ছে। সেই সুযোগ নিতে পারেন। কর্ণফুলী টার্নেল উদ্বোধন করা হবে কিছুদিন পরে। এ টানেলের সঙ্গে যে অঞ্চলগুলো সংযুক্ত হচ্ছে সেসব জায়গার জমির দাম বাড়বে। ঢাকা শহরে যদি মনোযোগ দেন, তাহলে দেখবেন পূর্বাচল খুব দ্রুত বর্ধনশীল একটা এলাকা। এই এলাকার আশপাশে জমির দাম বাড়বে। জমির দাম আসলে সব জায়গায়ই বাড়বে। কিন্তু কোনটা বেশি দ্রুত বাড়বে সেদিকে নজর দিতে হবে। পূর্বাচলের পাশে আপনি একা না পারেন, কয়েকজন মিলে, আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধব মিলে একটা প্লট নিন। এটা নির্ভর করে মূলত কী পরিমাণ টাকা আছে এবং ওই টাকা কতদিন ধরে আটকে রাখতে পারবেন তার উপরে।
যদি সহজে নগদায়ন করতে চান তাহলে জমিতে বিনিয়োগ ভালো কোনো জিনিস নয়। কিন্তু যদি মনে করেন আপনি পাঁচ-দশ বছর টাকা ফেলে রাখতে পারবেন তাহলে জমিতে বিনিয়োগ ভালো। কেউ কেউ ভাবছেন জমি কি এখনই কিনব নাকি আগামী বছর কিনব। এখানে একটা কথা বলা দরকার। অনেকেই কিন্তু ব্যাংকের সুদের হার কমে যাওয়াতে জমিতে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে ইতোমধ্যেই। ফলে জমির দাম এখন কিন্তু ঊর্ধ্বমুখী। আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, ২০২৩ বা ২০২৩-এর শেষের দিকে জমির দাম অনেক কমে যাবে। কারণ অনেকেই তাদের ইনভেস্টবল ফান্ড ব্লক করে ফেলছে, কিন্তু দেশের দরিদ্রের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এবং সব কিছু মিলিয়ে অস্থিতিশীল অবস্থার কারণে ২০২৩ সালে দেখবেন যে, অনেকেই তাদের জমি বিক্রি করতে চাইবে। তখন হয়তো ক্রেতা পাবে না। এজন্য ২০২৩ সালের মাঝামাঝি বা তার পরের সময়টা রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করাটা সবচেয়ে ভালো সময় বলে আমি মনে করি। কিন্তু এর মধ্যে যদি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থেমে যায় তাহলে আবার এ অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে।
পরিশেষে বলতে চাই, প্রথমেই দেখুন আপনি আপনার ইমার্জেন্সি ফান্ড রেখেছেন কি না। তারপর আপনার পুরো ইনভেস্টেবল ফান্ড যেটা হাতে আছে এবং ইনভেস্টমেন্ট পোর্টফোলিও কীভাবে সাজাবেন সেটা আপনার শিক্ষা, জ্ঞান এবং বয়সের ওপর নির্ভর করে। বিনিয়োগযোগ্য টাকার ৩ ভাগের ২ ভাগ জমিতে বিনিয়োগ করেন, আরেক ভাগ এমনভাবে বিনিয়োগ করেন যেন চাইলেই বিশেষ প্রয়োজনে নগদায়ন করতে পারেন। যেমন ব্যাংকে রাখতে পারেন, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারেন, স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করতে পারেন, মিউচুয়াল ব্যাংকে বিনিয়োগ করতে পারেন, অথবা কোনো ব্যবসার ইকুইটিতে বিনিয়োগ করতে পারেন। কিন্তু এখানে সতর্কতা জরুরি।
আর বাকি যে টাকা আপনি জমিতে বিনিয়োগ করবেন সেটার অবস্থান দেখে নিন। যে এলাকায় কিনছেন সেখানে আপনার কতটুকু প্রভাব বা পরিচিত লোকজন আছে সেটা দেখে নিন। এই জমির দাম ভবিষ্যতে কেমন বাড়তে পারে সেটা দেখে নিন। এটি সরকারের খাস জমি কি না সেটাও দেখুন। এসব বিষয় দেখে জমি কিনুন। জমিটি কিনে আপনার সীমানা নির্ধারণ করে আপনি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিন। যদি পারেন, বায়না করার সাথে সাথে সাইনবোর্ড লাগান। এবং সেখানে এই জমির ক্রয়সূত্রে-মালিকের নাম এবং নাম্বার লিখে দিন। এবং লিখে দিন, কারো যদি কোনো আপত্তি থাকে তাহলে উল্লেখিত নাম্বার এ যোগাযোগ করুন। দেখবেন যে এই সাইনবোর্ডটা ঠিক থাকে কি না। যদি দেখেন সাইনবোর্ডটা ঠিক আছে তাহলে বুঝবেন জমিটি নিষ্কণ্টক। আর যদি না থাকে, তাহলে বুঝবেন কোনো না কোনো ঝামেলা আছে। তারপর জমিটি রেজিস্ট্রি করে নিন এবং সাথে সাথে খারিজ করে নিন। অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রেও এই প্রক্রিয়া অবলম্বন করুন। জমির ক্ষেত্রে সুবিধা হচ্ছে, আপনি জমি কিনলেন, পরে ডেভেলপারকে দিয়ে দিলেন। যদি ভালো ডেভেলপার হয়, আপনাকে সঠিক সময় হ্যান্ডওভার করে, তাহলে সুবিধা হচ্ছে আপনি অনেকগুলো অ্যাপার্টমেন্ট একসাথে পেতে পারেন। এজন্য আমাদের মতো দেশগুলোতে জমিতে বিনিয়োগ সবচেয়ে লাভজনক। তবে এখানে ধৈর্য এবং সতর্কতা লাগে।
- সাইফুল হোসেন: কলাম লেখক, অর্থনীতি বিশ্লেষক ও বিজনেস স্ট্রাটেজিস্ট